Blog
খেজুর গুড়ের পায়েস তৈরির সহজ পদ্ধতি

খেজুর গুড়ের পায়েস বাঙালিদের কাছে একটি প্রিয় মিষ্টান্ন। শীতকালে খেজুরের গুড়ের স্বাদ ও ঘ্রাণে তৈরি এই পায়েস বিশেষ আকর্ষণ নিয়ে আসে। এটি খুব সহজে ঘরে তৈরি করা যায় এবং উৎসব বা যেকোনো অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা যায়। আজকের এই ব্লগে আমরা শিখব খেজুর গুড়ের পায়েস তৈরির সহজ এবং কার্যকর পদ্ধতি।
যা যা লাগবে (উপকরণ)

- চাল: আধা কাপ (বাসমতী বা আতপ চাল)
- দুধ: ১ লিটার (ফুল ক্রিম হলে ভালো)
- খেজুর গুড়: আধা কাপ (স্বাদ অনুযায়ী কম-বেশি)
- জল: আধা কাপ
- ঘি: ১ টেবিল চামচ
- কাজু বাদাম: ২ টেবিল চামচ (কুচি করা)
- কিশমিশ: ১ টেবিল চামচ
- এলাচ: ২-৩টি (গুঁড়ো করা)
- তেজপাতা: ১টি
খেজুর গুড়ের পায়েস তৈরির সহজ পদ্ধতি

- চাল ধুয়ে নেওয়া: চালকে ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে চাল সেদ্ধ হতে সময় কম লাগবে।
- দুধ গরম করা: একটি পাত্রে দুধ নিয়ে মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন। দুধ ফুটতে শুরু করলে এতে তেজপাতা দিন।
- চাল সেদ্ধ করা: ভেজানো চাল দুধে দিয়ে নাড়তে থাকুন। চাল ভালোভাবে সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত মাঝেমধ্যে নাড়তে থাকুন, যাতে দুধ পাত্রে লেগে না যায়।
- খেজুর গুড় মেশানো: একটি আলাদা পাত্রে খেজুর গুড় এবং আধা কাপ জল মিশিয়ে হালকা আঁচে গলিয়ে নিন।
- সতর্কতা: দুধে সরাসরি গুড় মেশাবেন না, কারণ এতে দুধ কেটে যেতে পারে।
- গুড় মিশ্রণ যুক্ত করা: চাল পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে গেলে এবং পায়েস একটু ঘন হয়ে এলে গলানো খেজুর গুড় দুধের মধ্যে আস্তে আস্তে মেশান। নাড়তে থাকুন, যাতে গুড় দুধে ভালোভাবে মিশে যায়।
- মসলার সংযোজন: এলাচ গুঁড়ো দিয়ে দিন এবং আরও ২-৩ মিনিট রান্না করুন।
- বাদাম ভাজা: একটি ছোট প্যানে ঘি গরম করে কাজু বাদাম ও কিশমিশ হালকা ভেজে নিন। এরপর এটি পায়েসে মিশিয়ে দিন।
পায়েস পরিবেশন
পায়েস পুরোপুরি ঠান্ডা হলে এটি পরিবেশন করুন। ঠান্ডা বা হালকা গরম যেকোনো অবস্থায় খেজুর গুড়ের পায়েস খেতে অসাধারণ।
টিপস:
- গুড়ের পরিমাণ আপনার স্বাদ অনুযায়ী বাড়াতে বা কমাতে পারেন।
- পায়েস আরও মজাদার করতে সামান্য কেওড়া জল বা গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন।
- পায়েস ঘন করতে চাইলে সামান্য কনডেন্সড মিল্ক যোগ করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
প্রশ্ন ১: খেজুর গুড় ছাড়া কি পায়েস বানানো সম্ভব?
হ্যাঁ, খেজুর গুড়ের পরিবর্তে চিনি বা অন্যান্য মিষ্টি ব্যবহার করে পায়েস বানানো সম্ভব। তবে খেজুর গুড় পায়েসে একটি অনন্য স্বাদ ও ঘ্রাণ যোগ করে।
প্রশ্ন ২: পায়েস কতক্ষণ সংরক্ষণ করা যাবে?
ফ্রিজে রেখে পায়েস ২-৩ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে পরিবেশনের আগে সামান্য গরম করে নিলে ভালো লাগবে।
প্রশ্ন ৩: পায়েসে কোন ধরণের চাল ব্যবহার করা ভালো?
বাসমতী বা আতপ চাল ব্যবহার করা ভালো। আতপ চাল পায়েসে একটি নরম ও মসৃণ টেক্সচার আনে।
প্রশ্ন ৪: দুধ কেন কেটে যায় এবং কীভাবে এড়ানো যায়?
খেজুর গুড় সরাসরি দুধে মেশালে দুধ কেটে যেতে পারে। তাই গুড় আগে গলিয়ে তারপর মেশানো উচিত।
প্রশ্ন ৫: পায়েসে আরও কী কী উপকরণ যোগ করা যেতে পারে?
আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী ছাতু, নারকেল কুচি, বা পেস্তা বাদাম যোগ করা যেতে পারে।
উপসংহার
খেজুর গুড়ের পায়েস শীতের সন্ধ্যায় কিংবা উৎসবের পরিবেশে এক মিষ্টি সুখ এনে দেয়। সহজ উপকরণ ও সরল প্রণালী অনুসরণ করে আপনি ঘরেই এই পায়েস তৈরি করতে পারেন। আপনার প্রিয়জনদের সঙ্গে শীতকালীন এই সুস্বাদু মিষ্টান্ন উপভোগ করুন। আপনার যদি এই রেসিপি সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে, কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না!